সর্বশেষ :
জকিগঞ্জে নোমান হত্যা : আসামি সুমনের ৪ দিনের রিমান্ড, এবার স্ত্রীর নতুন মামলা প্রেমের পরিণতি অনশন: স্বামীর ঘরে উঠতে বিশ্বনাথের অন্তঃসত্ত্বা তরুণীর আহাজারি ট্রেনের ৭০০ টিকিটসহ ৩ ‘কালোবাজারি’ আটক, ১৫ দিনের কারাদন্ড এসএমপি’র ৩২ঘন্টার অভিযান: সিলেট নগরীতে গ্রেফতার ৬৭ সিলেটে যে সকল রাস্তায় গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিল পুলিশ বুধবার থেকে এক ক্লিকে জামিননামা চলে যাবে কারাগারে হবিগঞ্জে হত্যা মামলায় একজনের আমৃত্যু, ১৪ জনের যাবজ্জীবন এবার রেলওয়ে স্টেশনে ডিসির ঝটিকা অভিযান ১ কোটি টাকা মূল্যের জাল নোট ও বিদশেী অস্ত্রসহ র‌্যাবের হাতে আটক ১ জামালগঞ্জে হাওরের বুকে নবীন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় — হেমন্তে পাও, বর্ষায় নাও ভরসা
চন্দ্রনাথ পাহাড়ে উসকানিমূলক কার্যক্রম দেখামাত্র ব্যবস্থার নির্দেশ তিন উপদেষ্টার

চন্দ্রনাথ পাহাড়ে উসকানিমূলক কার্যক্রম দেখামাত্র ব্যবস্থার নির্দেশ তিন উপদেষ্টার

একুশে সিলেট ডেস্ক

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সনাতন ধর্মালম্বীদের তীর্থস্থান চন্দ্রনাথ পাহাড় ঘিরে ‘উসকানিমূলক’ কার্যক্রম দেখামাত্র ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা।

বুধবার সকালে ঢাকার রেলভবনে চন্দ্রনাথ ধাম (কাঞ্চননাথ-চন্দ্রনাথ-আদিনাথ) শ্রাইন কমিটির সঙ্গে বৈঠকের সময় তাৎক্ষণিকভাবে তারা এমন নির্দেশনা দিয়ে মাঠ প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সজাগ থাকতে বলেছেন।

বৈঠকের তথ্য জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শ্রাইন কমিটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এবং ধর্ম উপদেষ্টা আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন।

গত ১৫ অগাস্ট এম এম সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী ঢাকা থেকে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন। পরদিন তিনি ফেইসবুকে একটি পোস্ট দেন।

হেফাজতে ইসলামের নেতা হারুন ইজহারের সঙ্গে একটি ছবি প্রকাশ করে ওই পোস্টে সাইফুল ইসলাম লেখেন, “সীতাকুণ্ড পর্বতের চূড়ায় মসজিদ ৯০ শতাংশ কনফার্ম।”

ফেইসবুকে ওই পোস্টটি ছড়িয়ে পড়লে সেখানে কেউ কেউ মসজিদ নির্মাণে আর্থিক সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

এ নিয়ে ফেইসবুকে আলোচনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। চন্দ্রনাথ পাহাড়ের মন্দিরের এলাকা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা শ্রাইন কমিটি তখন বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে হেফাজতে ইসলামের নেতা হারুন ইজহারের সাথে যোগাযোগ করা হয়। এরপর ১৭ অগাস্ট ফেইসবুকে একটি পোস্ট দেন মুফতি হারুন ইজহার।

সেখানে তিনি লেখেন, “ঢাকার কিছু তরুণ আলেম উদ্যোক্তা গতকাল আমার সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে আসেন। আমি তখন সফরে বের হচ্ছিলাম, মাত্র কয়েক মিনিট কথা হয় তাদের সাথে। সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ মন্দির এলাকায় কোনো মসজিদ নির্মাণের অভিপ্রায় তারা ব্যক্ত করেননি।

“তারা শুধু বলেছেন, পর্যটকদের জন্য উপযুক্ত কোন জায়গায় একটা মসজিদ দরকার এবং এ বিষয়ে তারা অর্থায়নে আগ্রহী। আমি তাদের এর জন্য সাধুবাদ জানাই। আর আমিও মনে করি ইকোপার্ক অংশে মুসলিম পর্যটকদের সুবিধার জন্য ইবাদাতখানা নির্মাণের জন্য প্রশাসনের সাথে পরামর্শ করে একটা উদ্যোগ নেওয়া যায়।”

এই আলোচনার মধ্যে সীতাকুণ্ডের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম, স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা ও শ্রাইন কমিটির নেতারা চন্দ্রনাথ পাহাড় পরিদর্শনে যান ১৭ অগাস্ট।

পরিদর্শন শেষে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞতিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, চন্দ্রনাথ মন্দির এলাকা পরিদর্শন করে সেখানে মসজিদ নির্মাণের কোনো উদ্যোগের ‘প্রমাণ পাওয়া যায়নি’।

তিনি বলেন, “সনাতন ধর্মাবলম্বী সকলকে আশ্বস্ত করা যাচ্ছে, চন্দ্রনাথ মন্দির এলাকায় মসজিদ নির্মাণের কোনো অনুমতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি।”

এরপর ২৪ অগাস্ট চট্টগ্রামে এক মতবিনিময় সভায় এ প্রসঙ্গ ধরে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, “সেখানে কোনো প্রকার মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি এবং এ বিষয়ে প্রচারিত সংবাদ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”

চন্দ্রনাথ পাহাড়ে নতুন করে কোনো মসজিদ নির্মাণের ‘প্রশ্নই ওঠে না’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ধর্ম উপদেষ্টার এ মন্তব্যের তিন দিন পর ঢাকায় বৈঠকে শ্রাইন কমিটির নেতারা বলেছেন, পাঁচ বছর ধরে মন্দির ঘিরে বিভিন্ন ধরনের ‘উসকানিমূলক’ কর্মকাণ্ড দেখা যাচ্ছে। সম্প্রীতির ‘পরিবেশ নষ্টের’ অপচেষ্টা চলছে বলেও দাবি করেছেন তারা।

পাশাপাশি পাহাড়ে অবস্থিত মন্দিরে যাতায়াতের জন্য সিঁড়ি সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরে কমিটির সদস্যরা।

শ্রাইন কমিটির সভাপতি অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, সিঁড়ি এখন খুব একটা ভালো অবস্থায় নেই। দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদীকে ফোন করে সিঁড়ি সংস্কারের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।

বৈঠকে উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় বলেন, “ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি নির্বিশেষে অন্তবর্তী সরকার সবার জন্য বৈষম্যহীন সমাজে নির্মাণে কাজ করছে।”

উপদেষ্টা খালিদ হোসেন বলেন, “অন্য ধর্মের স্থাপনার ওপর যারা আক্রমণ করে তারা কোনোভাবেই ধার্মিক হতে পারে না। এটা অপরাধ। এ কাজে কোনো ধর্ম নেই, অধর্ম রয়েছে। ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্টের কোনো ধরনের চেষ্টা হলে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।

“আমি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আহ্বান জানাই আপনারা নায্য দাবি-দাওয়াগুলো মন্ত্রণালয়ে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট বরাবর পাঠান, আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।”

ফাওজুল কবির খান বলেন, “চন্দ্রনাথ মন্দিরের সঙ্গে ইতিহাস, ঐতিহ্য জড়িত। আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয় এমন কোনো উসকানিমূলক কার্যক্রম বরদাশত করা হবে না। কোনো ধরনের উসকানির চিহ্ন দেখলে সঙ্গে সঙ্গে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff